রমজান অর্থ জ্বালিয়ে দেওয়া। আর রমজান এক বছরের ছোট গুনাহ বা ছগিরা গুনাহ জ্বালিয়ে দেয়। তাই প্রতি বছর মু’মিন ব্যক্তির ছগিরা গুনাহসমূহ জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য রমজান মাস আসে। রমজান মাসে যেসব গুনাহ মাফ হয় তা ছগিরা গুনাহ। নামাজ, রোজা, নেক কর্মদ্বারা গুনাহ ছগিরা মাফ হয়।[১] বড় গুনাহ বা কবিরা গুনাহ তাওবার মাধ্যমে মাফ হয়। আর তাওবা মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগে কবুল হয়।[২]
রোজা ৩০ দিন ফরজ হওয়ার তাৎপর্য হলো, যখন আদম আলাইহিস সালাম জান্নাতের গাছের ফল খাওয়ার পর তা ৩০ দিন পেটে ছিল। যখন তিনি খাঁটি তাওবা করলেন তখন আল্লাহ ৩০ দিন তার রোজা রাখার হুকুম দিলেন। তার অপরাধ ও দেহ থেকে খাদ্যের উপকরণ দূর করার জন্য ৩০ দিন রোজা ফরজ করেছেন।[৩]
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, মানুষ কোনো খাদ্য খেলে তার উপকরণ ৩০ দিন পর্যন্ত থাকে। তাই আদম আলাইহিস সালাম ও হাওয়া আলাইহাস সালাম গন্ধম খেলে তার উপকরণ ৩০ দিন পর্যন্ত থাকবে। সেজন্য অপবিত্র খাদ্য থেকে পবিত্র করার জন্য ৩০ দিন রোজা ফরজ করেছেন।[৪]
আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়াকে সৃষ্টি করার পর জান্নাতে বসবাস করার জন্য আদেশ দিলেন এবং বললেন যে, নিষিদ্ধ গাছের নিকটে যেও না। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আদম ও হাওয়া গাছের ফল খেলেন এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে তাদের দুনিয়াতে পাঠালেন।
নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার কারণে আদম আলাইহিস সালাম-এর দেহ মুবারকের রং কালো হয়ে যায়। তখন ফেরেশতাগণ হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর দেহের রং পূর্বের ন্যায় পরিবর্তনের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। তখন আল্লাহ চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়ে অহি পাঠালেন। আদম আলাইহিস সালাম ওহি অনুযায়ী রোজা রাখলেন। এতে তার গায়ের রং উজ্জ্বল হলো। এ কারণে এ তিন দিনকে আইয়ামে বীজ বা উজ্জ্বল দিবস বলা হয়। দুনিয়ার প্রথম মানব আদম আলাইহিস সালাম রোজা রাখার পদ্ধতি চালু করেন।
তথ্যসূত্রঃ
১। সূত্র : বুখারি, তিরমিজি।
২। সূত্র : মুসনাদে আহমদ।
৩। দুররাতুন নাছেহীন: ২৯
৪। মাজালিসুল আবরার।
Discover more from RoushanDAlil.com
Subscribe to get the latest posts sent to your email.