ঐতিহাসিক বদরযুদ্ধঃ একটি পর্যালোচনা

মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভী

দিনটি ছিল শুক্রবার। ১৭ই রমজান দ্বিতীয় হিজরী। মদীনা উপকন্ঠ হতে ৮০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত বদর নামক স্থানে সংঘটিত হয় বদরযুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারণ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা আগমনের পর ইসলামের ক্রমবর্ধমান উন্নতি, অগ্রগতি ও সফলতা দেখে ইসলাম বিদ্বেষী বাতিল অপশক্তির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ আবু জেহেল ওতবা প্রমুখ কাফেররা মুসলমানদেরকে সমূলে ধবংস করার দৃঢ় প্রত্যয়ে দ্বিতীয় হিজরীতে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা হয়। এ সংবাদ শুনে কোরাইশ দলপতিদের গতিরোধ করার জন্য মাত্র তিনশত তের জন অপ্রস্তুত নিরস্ত্র ভক্তবৃন্দের দ্বারা গঠিত ক্ষুদ্রবাহিনী নিয়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা থেকে রওয়ানা হয়ে মদীনার মধ্যবর্তী বদর নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেন। ৩১৩ জনের মধ্যে ২ জন উষ্ট্রারোহী ৮০ জন তরবারীধারী ও কতিপয় বর্শাধারী ছিলেন। অবশিষ্ট সকলে ছিলেন নিরস্ত্র। অসীম মনোবল ও দৃঢ় প্রত্যয়ে তারা আত্মরক্ষা মূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলেন।

পক্ষান্তরে কোরাইশদের প্রায় সহস্রাধিক যোদ্ধা রীতিমত অংশে সুসজ্জিত হয়ে রণদক্ষ বীর সেনাপতির নেতৃত্বে মুসলমানদের ক্ষুদ্র বাহিনীর উপর আক্রমণ চালাল। কিন্তু মহান সত্ত্বা করুণাময়ের অপার মহিমায় মুসলমানরাই যুদ্ধে বিজয় লাভ করে। কোরাইশদের ১০০ অশ্বারোহী ৭০০ উষ্ট্রারোহী, অবশিষ্ট পদাতিক এ বিশাল বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় সত্তর বছর বয়স্ক কোরাইশ নেতা আবু জেহেল। কিন্তু‘ আল্লাহর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলো, কাফিরদল শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করলো। আল্লাহর ঘোষণা, “সত্য সমাগত, বাতিল অপসৃত বাতিলতো অপসৃত হবারই”।

কোরাইশ দলপতি যথাক্রমে আবু জেহেল, ওতবা, রবীয়া ও শায়বা প্রমুখ যুদ্ধে প্রাণ হারাল। কাফিরদের ৭০ জন নিহত ও ৭০ জন বন্দী হলো পক্ষান্তরে মুসলমানদের ১৪ জন শাহাদাত বরণ করলেন। এদের মধ্যে ৬জন মুহাজির ও ৮ জন আনসার। প্রকৃতপক্ষে বিগত দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে মুসলমানদের সাথে কাফির মুশরিক বাতিল ও তাগুতি অপশক্তির যত যুদ্ধ সংঘাত হয়েছে তাতে কোন দিনই মুসলমানদের সংখ্যা শত্রু“ সৈন্য থেকে অধিক ছিলনা। কিন্তু অধিকাংশ সময় বিজয় মালা শোভা পেয়েছে মুসলমানদেরই ভাগ্যে। নিম্নে তার একটি চিত্র উপস্থাপন করা হল-

যুদ্ধ               মুসলিম সৈন্য            শত্রু সৈন্য

বদর—————-৩১৩—————১,০০০

খন্দক————–৩,০০০————২৪,০০০

মূতা—————-৩,০০০————–১০,০০০

ইয়ারমূক———–৪০,০০০————২,৪০,০০০

কাদেসিয়া———–৮,০০০————-৬০,০০০

স্পেন—————-৭,০০০————১,০০,০০০

সিন্ধু—————-৬,০০০————-৫,০০,০০০

এতে প্রতীয়মান হয় যে, মুসলমানরা যুগে যুগে অল্পবলে বা জনবলে বিজয়ের গৌরব অর্জন করেননি, বরং মহান সত্ত্বার উপর অটল বিশ্বাস, অসীম মনোবল ও তাওহীদী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নবীপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে বিজয়ের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

বদর যুদ্ধ প্রাক্কালে নবীজির প্রার্থনা

দ্বিতীয় হিজরীর ১৭ই রমজান শুক্রবার হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু এর কন্ঠে সুললিত সূরে ফজরের আজান ধবনিত হল। হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র পেছনে মুজাহিদগণ জামাতের সঙ্গে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযান্তে— মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিগলিত চিত্তে সজল নয়নে আল্লাহর দরবারে নিম্নোক্ত প্রার্থনা করলেন-

হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে যে সাহায্য দানের অঙ্গীকার করেছ তা পূর্ণ কর। হে আল্লাহ্, তুমি আমাকে যা দিতে অঙ্গীকার করেছ তা দান কর। হে আল্লাহ্ যদি মুসলিম গোষ্ঠী নিহত হয় তবে পৃথিবী হতে তোমার ইবাদত উপাসনা অন্তর্হিত হবে।

আল্লাহ্ এ আকুল প্রার্থনার জবাবে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন। মহাগ্রন্থ’ কোরআনে এরশাদ হয়েছে-

“নিশ্চয় আমি পর্যায়ক্রমে এক সহস্র ফেরেশ্তা দ্বারা তোমাদিগকে সাহায্য করব।“

অন্যত্র আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেছেন-

“আল্লাহ্ বদর প্রান্তরে তোমাদিগকে সাহায্য করেছেন তখন তোমরা হীনবল ছিলে। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।“ -(আলে ইমরান ১২৩)

বদর প্রান্তরে মহানবীর মুজিযা

যুদ্ধ শুরুর সাথে সাথে এক মুঠো বালি হাতে নিয়ে “শাহাতুল ওজূহ্” (চেহারা বিকৃত হয়ে যাক) বলে কাফিরদের দিকে ছূঁড়ে মারেন। এরপরই মুসলমান সেনারা এক যোগে কাফেরদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদেরকে ধরাশায়ী করে।

বদরযুদ্ধে দুই শিশুর বীরত্ব

মায়াজ ও মুয়াবজ নামে দু’জন শিশু নবীদ্রোহী আবু জেহেলের খোঁজ করতে করতে আবদুর রহমান ইবনে আওফের নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন- আবু জেহেল লোকটি কে? আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, যে কোন উপায়ে আবু জেহেলকে হত্যা করব। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ শিশু দু’টিকে সঙ্গে নিয়ে কিছুক্ষণ খোঁজ করার পর আবু জেহেলের স্থান পেলেন। ইতোমধ্যে আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদ সেখানে উপস্থিত হলেন, মায়াজ ও মুয়াবজ আবু জেহেলকে দেখামাত্র বীরদর্পে আক্রমণ করল। নবীদ্রোহী কাফির আবু জেহেল মাটিতে পড়ে গেল। তৎক্ষণাৎ আদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু লাফ দিয়ে আবু জেহেলের বুকের উপর উঠে বসলেন। যেহেতু আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ ইসলাম গ্রহণ করার পর একদা আবু জেহেল তাঁকে ইসলাম ত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল। তিনি আবু জেহেলের উক্তিকে ঘৃণ্যভরে প্রত্যাখান করেন এবং ইসলামের উপর অটল ছিলেন। এতে আবু জেহেল তাঁর নূরানী চেহারায় সজোরে চড় মেরেছিল, তখন আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদ বলেছিলেন এর প্রতিশোধ তোকে একদিন অবশ্যই প্রদান করব। সুতরাং তাঁর সে প্রতিজ্ঞা পূরণ করলেন।

বদরের পর প্রথম ঘটনা

বদর যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তনের পর হযরতের পারিবারিক জীবনের প্রথম ঘটনা হচ্ছে, হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সাথে হযরত ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা’র বিবাহ। বদরযুদ্ধে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু’ই অধিক বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে তাই যেন তিনি তাঁর কৃতিত্বের পুরষ্কার লাভ করলেন। হযরতের প্রিয় দুলালী নয়নমণি ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা’কে জীবন সঙ্গীনী হিসেবে বরণ করার চেয়ে আনন্দ ও বড় পুরষ্কার আর কি হতে পারে? হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই খোৎবা পড়ে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা’কে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ করে দিলেন।

যুদ্ধবন্দীদের প্রতি সদয় ব্যবহার ও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা

শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে যাদের বন্দী করা হলো, তাদেরকে বিনা প্রতিশোধে ক্ষমা ঘোষণা করে মহানবী মানবতা ও উদারতার যে দৃষ্টাত স্থাপন করেছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে চিরঅম্লান হয়ে থাকবে। তিনি যুদ্ধ বন্দীদের ব্যাপারে এরশাদ করেছেন- বন্দীদের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার কর। তিনি বাধ্যতামূলকভাবে বন্দীদের থেকে মুক্তিপণ আদায় করেননি। বন্দীদের সাধ্যানুসারে তিনি মুক্তিপণ আদায় করেছিলেন। যারা সঙ্গতিসম্পন্ন তাদের প্রত্যেককে ২০০০ হতে ৬০০০ দিরহাম। যারা নিতান্ত দুর্বল ছিল হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বিনা পণেই মুক্তি দিয়েছিলেন। আর বন্দীদের মধ্যে যারা শিক্ষিত ছিল তাদের প্রত্যেককে মদীনার দশজন বালক বালিকাকে লেখাপড়া শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব দেন। শিক্ষার আলো বিতরণে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্তি করণে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র এ পদক্ষেপ যুগ যুগ ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। অপর দিকে প্রিয়নবীর আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয়ে সাহাবারা নিজেরা পায়ে হেঁটে বদরের যুদ্ধবন্দীদের উটের পিটে তুলে মদীনায় আনেন, নিজেরা শুকনো খেজুর খেয়ে তাদেরকে রুটি খেতে দেন। হুজূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরাইশদের প্রতি সৌজন্য সহানুভূতি ও ক্ষমার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিশ্ব ইতিহাসে তার উদাহরণ বিরল। তিনি উদারকল্পে ঘোষণা করেছেন,তোমরা সকলেই আজ মুক্ত। আজ তোমাদের প্রতি কোন নিন্দাবাদ নেই।

বদর যুদ্ধে শাহাদাত প্রাপ্ত সাহাবাগণ

(১) হযরত মেহজাহ্ বিন ছালেহ রাদিয়াল্লাহু আনহু (তিনি ওমর ফারূক্ব রাদিয়াল্লাহু আনহু’র ক্রীতদাস ছিলেন)

(২) উবাইদা বিন হারিছ ইবনে মুত্তালিব ইবনে আবদে মুনাফ রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৩) উমাইর বিন আবু ওক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৪) আকেল বিন বুকাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৫) উমাইর বিন আবদে উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৬) আওফ বা আওফ বিন আফরাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৭) মু’আজ বিন আফরাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৮) হারিছ বিন সুরাকা রাদিয়াল্লাহু আনহু

(৯) ইয়াযিদ বিন হারিছ রাদিয়াল্লাহু আনহু

(১০) রাফে বিন মুয়াল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু

(১১) আম্মার বিন জিয়াদাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু

(১২) সাদ বিন হমীছাহ্ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু

(১৩) উমাইর বিন হাম্মাম রাদিয়াল্লাহু আনহু

(১৪) মুবাশ্শির বিন আবদুল মুনযির আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু।

বদরের প্রথম শহীদ

যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পূর্বদিন হযরত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ময়দানের সর্বত্র ঘুরে ময়দানটি একবার পর্যবেক্ষণ করেন এবং সারারাত আল্লাহর ইবাদতে বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত করেন। ফজরের নামাযান্তে যখন সাহাবাগণ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন সময়ে কাফেররা মুসলমানদের শিবিরে তীর নিক্ষেপ করছিল। একটি তীর সাহাবী হযরত মেহজার এর বক্ষ স্থলে বিদ্ধ হলে তিনি কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করতে করতে মাওলায়ে হাকিকীর সান্নিধ্যে চলে গেলেন।

জিহাদ ও সাধারণ যুদ্ধের তূলনামূলক বিশ্লেষণ

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় আদর্শে আদর্শবান ও স্বীয় চরিত্রে চরিত্রবান করে ১ লক্ষ ২৪ হাজার সাহাবায়ে কেরামকে পৃথিবীবাসীর জন্য আদর্শ শিক্ষকরূপে তৈরী করেছিলেন। তাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা সর্বশ্রেষ্ঠ বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। ইসলামের ইতিহাসে ৮০টির মত যুদ্ধ সংগঠিত হওয়া সত্ত্বেও যে রক্তক্ষয় হয়েছে তা সাধারণ যুদ্ধের তুলনায় অতি নগণ্য।

ইসলামের ৮০টি জিহাদে আহত-নিহতদের তালিকা,

বন্দী             আহত            নিহত

১১জন——–১২৭জন——৪৫৯ জন

এতে প্রতীয়মান হয় যে, সমস্ত যুদ্ধে মাত্র ৯১৮ জন লোক প্রাণ দিয়েছে। তম্মধ্যে ৪৫৯ মুসলমান শাহাদাত বরণ করেছেন। অতএব, এই বিপ্লবকে রক্তহীন বিপ্লব বললে আদৌ অত্যুক্তি হবে না।

অথচ ৬৬ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ফরাসী বিপ্লব সফল হয়েছে। এমনকি সোভিয়েত রাশিয়াতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবকে সফল করার জন্য ১ কোটিরও বেশী লোককে প্রাণ দিতে হয়েছে।

আর ১৯১৪-১৮ সালে সংগঠিত প্রথম মহাযুদ্ধে ৭৩ লক্ষ ৩৮ হাজার লোককে প্রাণ দিতে হয়েছে। এ যুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা পৃথিবীর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যা পেশ করা হয়েছে তা নিম্নে বর্ণিত হলো।

রাশিয়া – ১৮ লক্ষ,

ইতালী – ৪ লক্ষ ৬০ হাজার,

তুরস্ক – ২ লক্ষ ৫০ হাজার,

রোমান – ১ লক্ষ,

জার্মানী – ১৬ লক্ষ,

অস্ট্রিয়া – ৮ লক্ষ,

বেলজিয়াম – ১ লক্ষ ২ হাজার,

ফ্রান্স – ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার,

বৃটেন – ৭ লক্ষ ৬ হাজার,

বুলগেরিয়া – ১ লক্ষ,

আমেরিকা – ৫০ হাজার,

অন্যান্য – ১ লক্ষ।

সর্বমোট – ৭৩ লক্ষ ৩৮ হাজার জন।

তথ্যসূত্রঃ হিকমতে ইনকিলাব, ৬৫৯ পৃষ্ঠা, হামদান [পত্রিকা তাং ১৭ এপ্রিল ১৯১৯]

এ কারণে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে এক কোটির চেয়েও অধিক লোককে প্রাণ হারাতে হয়েছে যা নিম্নে বর্ণিত হল-

রাশিয়া – ৭ লক্ষ ৫০ হাজার,

আমেরিকা – ৩ লক্ষ,

বৃটেন – ৫ লক্ষ ৫০ হাজার,

ফ্রান্স – ২ লক্ষ,

জার্মান – ২৮লক্ষ ৫০ হাজার,

ইতালী – ৩ লক্ষ,

চীন – ২২ লক্ষ,

জাপান – ১৫ লক্ষ

সর্বমোট ১ কোটি ৬ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং ১ কোটি মানুষ গৃহহারা হয়।

তথ্যসূত্রঃ এনসাইক্লোপেডিয়া ২৩ খন্ড, ৭৭৫ এবং ৭৯৩পৃ.

পৃথিবীর বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহ ও বিপ্লবের যে হিসেব আমাদের সামনে রয়েছে তার তুলনায় মহানবীর নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবকে আদর্শ বিপ্লব ও রক্তহীন বিপ্লব বলা যায়। তাই আমরা যদি ঈমানী বলে বলীয়ান হয়ে, বদরের চেতনাকে ধারণ করে যাবতীয় ইসলামী বিরোধী শরীয়ত ও নৈতিকতা বিরোধী অন্যায় অসৎ ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই এবং নানা ধরণের কুফর শির্ক বিদ’আত ও মুনাফিকী পরিহার করে খোদাদ্রোহী ও নবীদ্রোহী বাতিল ও তাগুতী অপশক্তির বিষদাঁত ভেঙ্গে দিতে পারি। মহানবী ও খোলাফায়ে রাশিদীনের মডেলে সমাজ জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন গঠনে আত্মনিয়োগ করতে পারি তখনি আমাদের সিয়াম সাধনা সার্থক হবে, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা হবে। আল্লাহ্ আমাদের সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন ॥

তথ্যপঞ্জিঃ

  • কানযুল ঈমান – কৃত আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি,
  • বুখারী শরীফ,
  • এনসাইক্লোপেডিয়া অব ইসলাম (ঊর্দু) মুহাম্মদ ইয়াসিন কোরাইশী,
  • রসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন – কৃতঃ আবু সলিম মুহাম্মদ আবদুল হাই,
  • সিরাজাম্ মুনীরা (৮ম বর্ষ ৩য় সংখ্যা ১৯৮৮),
  • বিশ্বনবীর জীবনকথা – কৃতঃ মাওলানা মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম,
  • অগ্রপথিক – ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২য় বর্ষ, ৩৭ সংখ্যা ১৯৮৭ ও ৪র্থ বর্ষ ৩৭সংখ্যা ১৯৮৯,
  • বিশ্বনবী – গোলাম মুস্তফা।

Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading