রাসূলপ্রেমিক মোল্লা জা‘মী

মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ক্বাদিরী

মোল্লা জামী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ছিলেন সুপ্রসিদ্ধ ইতিহাসবিদ, ও নাহু শাস্ত্র (আরবী ব্যাকরণ)-এর ইমাম, অনন্য রাসূলপ্রেমিক, ফানা ফীর-রাসূল। তাঁর পুরো নাম হযরত আবূল বারাকাত নূরুদ্দীন আব্দুর রাহমান মুহাম্মাদ দাশতী (৮১৭হি. /১৪১৪খ্রি.-৮৯৮হি./ ১৪৯২খ্রি.) জা’মী নাকশ্বান্দী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি। তিনি রহস্যধর্মী সূফীসাহিত্যের পন্ডিত ও লেখক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। মোল্লা জা’মী একজন সুপ্রসিদ্ধ নবীপ্রেমিক। তাঁর নবীপ্রেমের কাহিনী জগৎবিখ্যাত। তিনি নিজে লিখতেন এবং গাইতেন। তাঁর না‘ত শারীফসমূহ মধ্যএশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশে সুদীর্ঘকাল ধরে সাধারণ মনে নাবীপ্রেমের হিল্লোল সৃষ্টি করে আসছে।

মোল্লা জা’মী’র বিপুলকায় কুল্লিয়াতে আছে দীর্ঘ থেকে সুদীর্ঘতর বহু না’ত (রাসূলপ্রসস্তি)। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র না‘ত শরীফগুলোও হিমেল সমীরণের মতো হিল্লোলিত এবং নদীতরঙ্গের মতো কল্লোলিত। মধুময় সূরে অনুরণিত, চন্দ্রালোর মোলায়েম মাধুর্যে শিহরিত। মানে ও আকর্ষণে তিনি ও তাঁর সৃষ্ট রচনাবলী বড়ই হৃদহরা। তাঁর রচিত বিশ্ববিশ্রুত, মনোমুগ্ধকর না’ত শারীফসমূহ; যা আশিক্বে রাসূলগণের হৃদয়ে হরহামেশা প্রেমের বাঁধভাঙ্গা জোয়ার তোলে; তা অনেক আশেকে রাসূল পাঠ ও শ্রবণ করলেও এর মর্ম বুঝেন না। প্রিয়জনদের আন্তরিক কামনা পূরণকল্পে নিন্মে একটি না‘ত শারীফের কিছু নির্বাচিত পংক্তির উচ্চারণ, অনুবাদ এবং কাব্যানুবাদ দেওয়ার চেষ্টা করলাম। আল্লাহর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দয়া কামনা করছি।

 

তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী

মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ২৩ শাবান ৮১৭ হিজরী মুতাবিক ১৪১৪ সালের ৭ নভেম্বর খোরাসানের জা’ম (বর্তমান ঘোর প্রদেশ, আফগানিস্তান) নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের পূর্বে তার পিতা আল্লামা নিজাম উদ্দীন আহমাদ বিন শামসুদ্দীন মুহাম্মাদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ইস্ফাহান জেলার দাস্ত নামক জায়গা থেকে হিযরত করে জা’মে আসেন। জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর জন্মের কয়েক বছর পরে তাদের পরিবার হেরাতে চলে যান এবং সেখানে নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত, ফার্সি সাহিত্য, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, আরবী ভাষা, যুক্তিবিদ্যা এবং ইসলামী দর্শন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। খাজা আলী সমরকন্দী, শাইখ জুনদ উসূলী এবং নিজ পিতা থেকে জ্ঞান অর্জন করেন।

পরে তিনি মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান শিক্ষা কেন্দ্র সমরখন্দে যান এবং তাঁর শিক্ষার্জন সম্পন্ন করেন। মোল্লা জা’মী’র ভাই মাওলান মুহাম্মাদও একজন পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর চার পুত্র জন্মগ্রহণ করেছিল। তন্মধ্যে তিনজন জন্মের প্রথম বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। জীবিত একমাত্র পুত্র ছিলেন জিয়াউদ্দীন ইউসূফ। মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর এই পুত্রের জন্য ‘বাহারিস্তান’ কাব্যগ্রন্থ এবং ইলমে নাহুর বিশ্ববিখ্যাত কিতাব “কাফিয়্যাহ্”-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘ফাওয়ায়িদে জিয়াইয়্যাহ্’; যা ‘শারহে মোল্লা জা’মী’ নামে সুপ্রসিদ্ধ- লিখেছিলেন।

মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বাল্যকালে খাজা মুহাম্মাদ পাশা রাহমাতুল্লাহি আলায়হি যখন তাঁদের শহরে আসেন তখন তাঁর সুদৃষ্টি পাওয়ার পর তিনি সূফীবাদে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি লিখনীর মাধ্যমে সূফীদর্শন সংশ্লিষ্ট বহুবিধ গোপন স্থরের ব্যাখ্যা প্রদান করেন। মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর অত্যধিক ধর্মনিষ্ঠা ও রহস্যপূর্ণ জীবনের জন্য পরিচিত। স্বপ্নে তিনি হযরত সা‘দ উদ্দীন কাসগারী নাকশ্বান্দী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে তাঁর হাতে বায়‘আত গ্রহণ করেন। মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি কাসাগারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর নাতনীকে বিবাহ করে তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি আল্লাহপাকের দীদার ও করুণা লাভের জন্য জীবন ত্যাগ করতে ইচ্ছাপোষণ করতেন। ফলে, সামাজিক রীতি-নীতি পালনে তিনি উদাসীন থাকতেন।

কর্মজীবনে মোল্লা জা’মী হেরাতে তিমুরী রাজসভায় দোভাষী ও সংবাদদাতার দায়িত্বও পালন করতেন। তাঁর সাহিত্যে পারস্য সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটেছে এবং ইসলামী প্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও ভারত উপমহাদেশে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাঁর কবিতায় জনসংস্কৃতির ধারণা প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি সূফীকবি হিসেবে পরিচিতির সাথে সাথে ধর্মতাত্ত্বিক কাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর কাজগুলো সমরখন্দ থেক ইস্তানবুল ও পারস্যের খায়রাবাদ, এমনকি মুঘল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ানো হত। মোল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তার কবিতা ও ব্যাপক জ্ঞানের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেরশের ইসলামী সভা-সেমিনারগুলো আজো তাঁর রচিত নাবীপ্রেমে না‘তসমূহের পংক্তির সূরে মতোয়ারা হয়ে ওঠে।

জীবনের শেষদিকে মুল্লা জা’মী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি আফগানিস্তানের হিরাতে গমন করেন এবং সেখানেই ১৭ মুহাররম ৮৯৮ হিজরী মুতাবিক ১৪৯২ খৃষ্টাব্দে ০৯ নভেম্বর ইন্তিকাল করেন। হিরাতেই তাঁর মাযার শরীফ অবস্থিত।

 

মোল্লা জামীরাহমাতুল্লাহি আলায়হির রচনাবলী

কাব্যগ্রন্থ/গ্রন্থ/চিঠি মিলিয়ে মোল্লা জা’মী’র রচনাবলীর সংখ্যা প্রায় ৮৭টি। উল্লেখযোগ্য রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে- ‘বাহারিস্তান’ (শেখ সাদী’র ‘গুলিস্তাঁ’ কাব্যগ্রন্থের অনুকরণে রচিত), ‘নাফ্হাতুল উনুস’ (সূফীগণের জীবনী), ‘লাওয়াইহ’ (সূফীবাদ বিষয়ক প্রবন্ধমালা), ’দিওয়ানে সেহ্গানেহ’ (ত্রিপদী কাব্য), তুহ্ফাতুল-আহ্রার, লাইলী-মাজনু, ফা’তিহাস-শাবা’ব, আদ্-র্দুরুল-ফা’কিরাহ, ‘তাজনীস আল লুগাত’ (আরবী-ফার্সী শব্দাভিধান), শারহুল কাফিয়্যাহ (শারহে জা’মী-নাহুর কিতাব)। গদ্য-পদ্য, ইহজীবন-পরজীবন, ধর্ম, এমনকি ইতিহাসশাস্ত্রও ছিল তাঁর লেখার বিষয়বস্তু। যেগুলোর মধ্যে কতগুলি আরবী, উর্দূ, বাংলা এবং ইংরেজী ভাষায় অনুদিত হয়েছে। জামী’র কাব্যরচনার ধারা বিখ্যাত ফার্সীভাষী কবি হা’ফিজ সিরাজী এবং মোল্লা শেখ মুসলেহ উদ্দীন সা‘দী’র দ্বারা বহুলাংশে প্রভাবিত হয়েছিল। কবি নিজেই স্বীকার করেন যে, তাঁর প্রধান কাব্য ‘হাপ্ত আওরঙ্গ’(সপ্ত সিংহাসন) গ্রন্থখানায় নিযামী গঞ্জুভীর রচনার প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে।

 

মোল্লা জামী রাহমাতুল্লাহি আলায়হির নাত সাহিত্যে ও রাসূলপ্রেম

স্বভাবকবি মোল্লা জা’মী রহমাতুল্লাহি আলায়হির কবিতা লেখা, আবৃত্তি করা খুব পছন্দনীয় কাজ ছিল। পার্সী কবিদের মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল শীর্ষে। পার্সী কাব্যসাহিত্যের ‘শেষকবি’ও বলা হয় তাঁকে। রাসূলপ্রেমে নিবেদিত তাঁর কবিতাসমূহ বড়ই হৃদয়গ্রাহী এবং আবেগপ্রবণ। আল্লামা জামী ছিলেন একজন প্রকৃত রাসূলপ্রেমিক। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসাই হচ্ছে একজন সূফী সাধকের আধ্যাত্মিক সাধনাপথের মূল ভিত্তি ও চালিকাশক্তি”।

সুপ্রিয় পাঠক! চলুন আমরা এই অমর নাবীপ্রেমিকের একটি প্রসিদ্ধ না’ত শারীফের অনুবাদ পড়ি! আহ কী আকুতি!

زرحمت کن نظر برحالِ زارم یا رسول اللّٰہؐ،
غریبم، بےنوایم، خاکسارم یا رسول اللّٰہؐ

উচ্চারণ: যে রাহমাত্ কুন্ নজর বর হা-লে যা-রম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ্!
গারীবম্, বে-নাওয়া’য়াম্ খা’কেসা’রাম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ্!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম! আমার লাঞ্চিত অবস্থার তরে দয়ার দৃষ্টি দান করুন। আমি যে নিঃস্ব, অসহায় এবং অস্তিত্বহীন/ধুলামিশ্রিত এক সত্তা।

কাব্যানুবাদ: ধিকৃত হালে আছি অধম, দয়া করুন- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
নিগৃহীত, ধুলামথিত, নিঃস্ব পরে, রহম করুন- হে রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!)

ز داغِ ہجر تَو کے دل فگارم یا رسول اللّٰہؐ،
بہارِ صد چمن در سینہ دارم یا رسول اللّٰہؐ!

উচ্চারণ: যে দা-গে হিজরে তূকে দিলফেগা’রম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ্!
বাহা’রে সদ্-চমন দর সীনা দারম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ্!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আপনার বিরহের আঘাতে আমার অন্তর খন্ড-বিখন্ড হয়ে গেছে। এই (বিরহকাতর) অন্তরে অসংখ্য ফুলবনের সজীবতার কামনা নিয়েই বেঁচে আছি।

কাব্যানুবাদ: তব বিরহে খন্ডিত হৃদয়ে অস্থির অধম- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম!
অঢেল ফুলের সুভাস হৃদে ভরে বেঁচে আছি- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম!

توئی تسکین دل آرامِ جاں صبر و قرارِ من،
رُخ پُر نور! جان بے قرارم یا رسول اللّٰہؐ!

উচ্চারণ: তু-য়ী তাস্কীনে দিল আ-রাম জাঁ, সবর-উ ক্বারারে মান,
রুখে পুর নূরে জাঁনে বে-ক্বারা’রম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আপনার পবিত্র সত্তা অধমের প্রশান্ত জীবন ও স্থির অন্তরের তরে একমাত্র শান্তির মাধ্যম। আপনার নূরানী চেহেরা মুবারকের দীদারই অধমের অস্থির রুহে র একমাত্র শান্তি।

কাব্যানুবাদ: শান্ত জীবন-স্থির মন তরে আপনিই কান্তি -হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
নূরানী সূরতই রুহের শান্তি, আপনিই প্রাপ্তি-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

مرا محو جمال خویش کن از شان رحمانی،
بہ ہجر تو چنا سینہ فگارم یا رسول اللہ!

উচ্চারণ: মুরা’ মাহ্বে জামা’লে খেশ কুন আয্ শা’নে রাহমানী,
বহ্ হিজরে তূ-ছুনা’ সীনাহ্ ফেগারম ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আপনার বিরহের গোপন যাতনায় আমার অন্তর জর্জরিত হয়ে গেছে। আল্লাহর ওয়াস্তে আমার অন্তর হতে আপনার মুহাব্বতের সৌন্দর্য মিটিয়ে দিন।

কাব্যানুবাদ: দোহাই খোদার! এই হৃদ হতে মুচুন প্রেম তব-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
তব বিরহের ছুপা ধ্বংশনে জর্জরিত এই গোলাম-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী  ওয়াসাল্লাম!

طواف روضے اقدس کنم صدبار روز و شب،
حضوری کن عطا امیدوارم یا رسول اللہ!

উচ্চারণ: তাওয়াফে রাওযায়ে আক্বদাস কুনম সাদবার রোয ও শব,
হুযূরী কুন ‘আত্বা’ উম্মিদওয়ারাম্ ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আমি আপনার রাওযায় উপস্থিত হওয়ার আশা রাখি। সুতরাং আমাকে তথায় উপস্থিত হওয়ার তাওফীক দান করুন! আমি দিনরাত অসংখ্যবার প্রদক্ষিণ করে করে আপনার পবিত্র রাওযা যিয়ারত করব।

কাব্যানুবাদ: হাযির হতে রওযা পরে তব অধম বড়ই আগ্রহী- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
দিন-রাত বেশুমার তাওয়াফ করবো রওযা তব- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

بحق عاشقانت بر من مسکیں کرم فرما،
کہ شوق دید تو بسیاردارم یا رسول اللہ!

উচ্চারণ: ব-হক্বে ‘আশেক্বা’নত্ র্বা মানে মিসকীন কারম ফারমা’,
কেহ্ শাওক্বে দীদ তূ বিসিয়া’রা দারম ইয়া রাসূলাল্লাহ

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আপনার ভালবাসার দোহায়! অসহায়ের উপর করুণা করুন। আমি আপনার বেশী বেশী দীদারের প্রত্যাশী।

কাব্যানুবাদ: রহম করুন মিসকীন তরে, দোহায় আপনার প্রেমের- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
বেশী বেশী দীদার দিয়ে ধন্য করুন! আশা পূরণ করুন-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

توئی مولائے من، آقائے من، والیِ جانِ من،
توئی دانی کہ جُز تَو کس نہ دارم یا رسول اللّٰہ!

উচ্চারণ: তুয়ী মাওলা-য়ে মান, আ-ক্বায়ে মান্, ওয়ালীয়ে জাঁনে মান,
তূয়ী দা’নী কেহ্ জুয-তূ কাস্ নাহ্ দা’রাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! আপনিই আমার সর্দার, মালিক এবং প্রণের নৃপতি। আর আপনি নিশ্চিত জানেন যে, আপনি ছাড়া আমার কেউ নেই।

কাব্যানুবাদ: প্রাণপতি, মালিক, সর্দার, ধরায় আপনি আমার-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!
আপনি বিনা নেই গো আপন ভালোই জানেন- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

دمِ آخر نمائی جلوہِ دیدار جامیؔ را،
زلُطفِ تو ہمیں امیدوارم یا رسول اللّٰہؐ!

উচ্চারণ: দমে আ-খের নুমা’য়ী জালওয়ায়ে দীদা’রে জা’মী রা’,
যে-লুত্বফে তূ হামী উম্মিদওয়ারম ইয়া রাসূলাল্লাহ!

অনুবাদ: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! শেষকালে জা’মীকে আপনার দীদার দানে ধন্য করবেন; আপনার মেহেরবানীতে এটাই শুধু আমি আশা রাখি।

কাব্যানুবাদ: নিদানকালে জা’মীকে দীদার দানে ধন্য করুন-হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম! তব দয়ার আশে এটুকুই চাওয়া, কবুল করুন- হে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম!

লেখক: প্রভাষক (আরবী) হাশিমপুর ইসলামিয়া মকবুলিয়া কামিল (এম.এ.) মাদরাসা- চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।

[প্রবন্ধটি মাসিক তরজুমান এর ১৪৪৫ হিজরি সংখ্যা হতে সংকলিত]

 


Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

ভিডিও লেকচারঃ “যুগের প্রকৃত বিজেতা “-শায়খুল ইসলাম আল্লামা সাইয়্যেদ আহমাদ শাহ (দাঃবাঃ)

আউলিয়ায়ে কিরামের শান সম্পর্কে চমৎকার ঈমান তাজা করা বক্তব্য। নিজে শুনুন এবং অন্য ভাই-বোনদেরকে শুনতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading