অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সাইয়্যেদ মুহাম্মদ অসিয়র রহমান হাফি.
“মুজাদ্দিদ” শব্দটি আরবি যা “তাজদিদ” ক্রিয়ামুল থেকে নির্গত, অর্থ: নতুনত্ব করা, পারিভাষিক অর্থে ধর্মীয় ও দ্বীনী ক্ষেত্রে এমন সব বিষয়ে পুণরুজ্জীবণ, পুর্ণর্গঠন ও সংস্কার সাধন করা, যেখানে ধর্মীয় উপকারিতা নিহিত রয়েছে। বিশেষত: যে সমস্ত ধর্মীয় বিষয়াদি ভণ্ড ও মুনাফিক্ব ও বাতিলচক্র কর্তৃক অবহেলা ও হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে এবং ইসলামী বিধানকে পরিবর্তন করার দুঃসাহস করা হয়েছে সে সব বিষয়াদিকে কোরআন-সুন্নাহর বিধান মোতাবেক প্রতিষ্ঠিত করার নামই “তাজদিদ” এবং “সংস্কারমূলক কার্যক্রম”। দ্বীন পুণরুজ্জীবিত করণের এ মহান কাজ যিনি করেন তিনি ইসলামী পরিভাষায় মুজাদ্দিদ।
মুজাদ্দিদ এমন কতিপয় গুণাবলীর ধারক হবেন, যেসব গুণাবলীতে দ্বীন-ই ইসলামের সামগ্রিক কল্যাণ নিহিত। ইসলামের বিধানকে প্রয়োগমুখী করতে তিনি নিবেদিত হবেন। মুজাদ্দিদ গবেষক হওয়া বাঞ্চনীয় নয়; বরং ইসলামের মূলধারা সুন্নীয়তের আদর্শে বিশ্বাসী ও বিশুদ্ধ আক্বীদার অধিকারী হওয়া আবশ্যক। ইসলামী জ্ঞানের গভীরতা ও বিজ্ঞ হওয়া, যুগের অদ্বিতীয় প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব হওয়া, দ্বীনের নিঃস্বার্থ সেবক, কুসংস্কারের মূলোৎপাটনকারী হওয়া, দ্বীন প্রতিষ্ঠার সাথে পার্থিব জীবনের ক্ষুদ্রতম স্বার্থকে জলাঞ্জলী দেওয়া, মুত্তাক্বী হওয়া শরীয়ত ও তরীকতের পূর্ণ পাবন্দ হওয়া ইসলাম ও শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপে কঠোর প্রতিবাদী এবং মূলোৎপাটনে সর্বশক্তি নিয়োগ করার মানসিকতা সম্পন্ন হওয়া- মুজাদ্দিদের সহজাত বৈশিষ্ট্য। উল্লেখ্য, আল্লামা ইসমাঈল হক্কী রহমাতুল্লাহি আলায়হি’র বর্ণনানুযায়ী যিনি মুজাদ্দিদ হবেন তিনি এক শতাব্দীর সমাপ্তিলগ্নে দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুতে হওয়া আবশ্যক। আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহমাতুল্লাহি তা’আলা আলায়হি স্বীয় কিতাব ‘মিরকাতুস সাউদে’ও একথা উল্লেখ করেছেন।
বর্তমান কাদিয়ানী সম্প্রদায় মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে চতুর্দশ শতাব্দির মুজাদ্দিদ মনে করে। তাকে “মুজাদ্দিদ” মনে করা মানে অভিশপ্ত শয়তানকে ফিরিশতাদের সর্দার মনে করার ন্যায়। কেননা সে মিথ্যা নবীর দাবীদার। শরীয়তের ফায়সালা মোতাবেক সে কাফের হিসেবে বিবেচিত। চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হলেন আ’লা হযরত ইমামে আহলে সুন্নাত শাহ আহমদ রেজা খাঁন ব্রেলভী রহমাতুল্লাহি তা’আলা আলায়হি। কেননা, তাঁর ব্যক্তিত্বে বাস্তবিকই দ্বীন সংস্কারের মহান গুণাবলী ও ও শর্তাবলী পূর্ণমাত্রায় সন্নিবেশিত হয়েছে। তিনি আজীবন ওহাবীজম, শিয়াজম, কাদিয়ানীসহ সকল বাতিল অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তদুপরি তাঁর জন্ম ১২৭২ হিজরীর ১০ শাওয়াল এবং ওফাত ১৩৪০ হিজরীর ২৫ সফর, অর্থাৎ এক শতাব্দীর শেষে আগমন আরেক শতাব্দীতে প্রস্তান।
লী কি?
Discover more from RoushanDAlil.com
Subscribe to get the latest posts sent to your email.