:: ১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন ::
খতিবে পাকিস্তান, শাইখুল হাদিস আল্লামা শফি উকাড়ভী রাহিঃ
ভাষান্তরঃ মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দীন হাফিঃ
ফাদাক সংক্রান্ত কিছু আপত্তি ও তার অপনোদন
আপত্তি নং-০১
বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে হুজুরের ওফাতের পর সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট হুজুরের পরিত্যক্তি সম্পত্তি “ফাই” বন্টন করে দেয়ার দাবী করলেন। হযরত আবু বকর তা প্রত্যাখ্যান করলেন, যার ফলে সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা ক্রুদ্ধ হন এবং যতদিন জীবিত ছিলেন তাঁর সাথে কথা বলেননি। আর সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে অসন্তুষ্ট করা যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অসন্তুষ্ট করা। সুতরাং আবু বকর সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে অসন্তুষ্ট করে আল্লাহ ও রাসূলকে অসন্তুষ্ট করেছেন।
অপনোদন:
বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে এমন কোন শব্দ নেই যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু’র প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন কিংবা হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছেন। হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর দাবীর প্রেক্ষিতে তাঁকে কেবল এটাই বলেছেন, হে সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের বাণী রয়েছে- “আমরা নবীগণ কাউকে আমাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করি না বরং যা কিছু আমরা রেখে যাই তা সাদকা।” খোদার কসম! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের সাদকায় কোন প্রকার পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করব না বরং সে অবস্থায়ই রাখব যেমন তাঁর যুগে ছিল। ওতে সে বিধানই রাখব যা তিনি চালু করেছিলেন। তবে (তাঁর যুগে যেমনটা ছিল) তাঁর পরিবারবর্গও এ থেকে আহার করবেন। (মুসলিম শরীফ)
বুখারী শরীফে রয়েছে- এটা শুনে সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা ক্রুদ্ধ হন এবং যতদিন জীবিত ছিলেন এই ব্যাপারে কথা বলেননি। হাদীস শরীফের শব্দাবলী এই- فَغَضَبَت فَاطِمَةٌ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ প্রণিধানযোগ্য বিষয় হল এই যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক এমন কোন শব্দ বলেননি যা তাঁর অসন্তোষের কারণ হতে পারে। বরং তিনি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মোবারক বাণী পেশ এবং বলেছেন, খোদার কসম! আমি তাঁর সুন্নাত মোতাবেক আমল করব এবং তাতে কোন পরিবর্তন করব না।
তাছাড়া সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাও শুনে এটা বলেন নি যে, আপনি ভুল বলছেন, নবীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন হয়ে থাকে। সুতরাং আমার আব্বাজানের সম্পত্তিও বন্টন হবে এবং আপনার কথা ও কাজ আমার আব্বাজানের কথা ও কাজের পরিপন্থী।
অতএব এই অসন্তোষ ছিল সাময়িক যা পরে মোটেই থাকেনি। কারণ সৈয়দা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁর আব্বাজানের বাণী সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন এবং তিনি হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। যেমন ইমাম বায়হাকী শা’বী থেকে সহীহ হাদীস বর্ণনা করেছেন:
إِنَّ أَبَابَكْرٍ عَادَ فَاطِمَةَ فَقَالَ لَهَا عليُّ أَبُو بَكْرٍ لَيَسْتَأْذِنُ عَلَيْكِ قَالَتْ اَتُحِبُّ أنْ اذَنَ لَهُ قَالَ نَعَمْ فَاذَنَتْ لَهُ فَدَخَلَ عَلَيْهَا فَرَضَاهَا حَتَّى رَضِيَتْ وَهُوَ
হযরত আবু বকর হযরত ফাতেমার রোগের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য এলেন। তখন হযরত আলী হযরত ফাতেমাকে বললেন, আবু বকর তোমার নিকট আসার অনুমতি চাইছেন। হযরত ফাতেমা বললেন, আপনি কি পছন্দ করেন যে, আমি তাঁকে অনুমতি দিই? হযরত আলী বললেন, হ্যাঁ! অতঃপর হযরত ফাতেমা অনুমতি দিলেন। হযরত আবু বকর সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার নিকট এলেন এবং তাঁকে রাজী করলেন এমনকি সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাও সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং হযরত আবু বকরও রাজী হয়ে যান। (যুরকানী আলাল মাওয়াহিব, খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা-৭)
এতদসত্ত্বেও যে, হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কোন অপরাধ করেননি বরং হুজুরের বাণী ও কর্মগত সুন্নাত পেশ করেছিলেন এবং তার উপর আমল করেছিলেন। তারপরও সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার অসন্তোষের কি পরিমাণ অনুভূতি তাঁর ছিল যে, তিনি স্বয়ং গমন করেন এবং তাঁকে সন্তুষ্ট করেন। সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাও রাজী হয়ে যান। কেননা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু যা বলেছেন তা সত্য ও সঠিক।
এরপরও যদি কেউ না মানে তা হলে প্রশ্ন হল এই-যখন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু’র খেলাফতকাল ছিল তখন পূর্ণ ক্ষমতা ও শক্তি ছিল তাঁর হাতে। অতঃপর তিনি কেন বাগে ফাদাক সৈয়দা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার সন্তানদের হস্তান্তর করেননি। অথচ আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ রয়েছে- আমানত তার হকদারের নিকট প্রত্যর্পণ কর। তিনি হকদারকে তার হক কেন প্রত্যর্পণ করেননি?
যদি উত্তর এই হয়- আহলে বায়তে কেরাম অপহৃত সম্পত্তি ফেরত নেন না, কেননা এটা তাদের পবিত্রতম শানের পরিপন্থী; তা হলে তাদের(শিয়াদের) উক্তি মতে খেলাফতও হযরত আলীর হক ছিল যা প্রথম তিন খলীফা অপহরণ করেছিলেন। অতএব ওই অপহৃত খেলাফত হযরত আলী ও হযরত হাসান কেন নিলেন? মা’য়াযাল্লাহ!
هاتُو ابرْهَانَكُمْ إِن كُنتُمْ صَدِقِينَ
অর্থাৎ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে প্রমাণ পেশ কর। (সূরা বাকারা-১১১)
আপত্তি নং-০২
আল্লাহ তায়া’লার বাণী يُوصِبُكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ (আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন) আয়াতে করীমা (যার মধ্যে উত্তরাধিকারের নিয়মাবলী বর্ণনা করা হয়েছে) ব্যাপক। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে এ থেকে বাদ রাখা হয়নি। সুতরাং যেমনিভাবে আমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি আমাদের সন্তানদের মধ্যে বন্টন হয় তেমনিভাবে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের সম্পত্তিও বন্টন হওয়া উচিৎ। হযরত আবু বকর হুজুরের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন না করে আল্লাহর এই মির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন।
অপনোদন:
يُوصِيكُم الله في اولادِكُمْ আয়াতে করীমায় সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতকে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম সর্বসম্মতিক্রমে এতে অন্তর্ভুক্ত নন। এর দলীল হল- আল্লাহ তায়া’লা উত্তরাধিকারের নীতিমালা বর্ণনা করার পর ফরমায়েছেন:
تِلْكَ حُدُودُ اللهِ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلُهُ جَنَّةٍ
অর্থাৎ এই সব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতঃ তাদের সীমার মধ্যে থাকবে আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। (সূরা নিসা-১৩)
প্রতীয়মান হল-এই নির্দেশ উম্মতে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের জন্য। মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম এতে অন্তর্ভুক্ত নন।
নচেৎ আয়াতে উল্লিখিত وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ এর অর্থ কি হবে?
পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বহুবচনের সর্বনাম كُمْ এর সম্বোধন বিদ্যমান রয়েছে যার মধ্যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম উভয় দলের সর্বসম্মতিক্রমে অন্তর্ভুক্ত নন। যেমন:
- ১.
فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ مَثْنَى وَثُلَثَ وَرُبَعَ
তবে বিবাহ কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে, দুই, তিন অথবা চার। (সূরা নিসা, আয়াত-৩)
এই আয়াতেও সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতকে। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম এর অন্তর্ভুক্ত নন। অতএব তাঁর বিবাহ বন্ধনে একই সময়ে নয়জন পত্নী ছিলেন।
- ২.
وَلَا تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ
তোমাদের কর্ম বিনষ্ট কর না। (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত-৩৩)
- ৩.
وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولُ اللَّهِ
তোমরা জেনে রাখো যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-৭)
এই আয়াতদ্বয়ে كُمْ সর্বনামের সম্বোধন বিদ্যমান। কিন্তু হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম অন্তর্ভুক্ত নন। অনুরূপভাবে يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِى أَوْلَادِكُمْ মধ্যে সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতকে, তিনি এতে অন্তর্ভুক্ত নন।
আপত্তি নং-০৩
যদি আম্বিয়ায়ে কেরামের পরিত্যক্ত সম্পত্তি তাঁদের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টন না হয় তা হলে এই আয়াতে করীমা وَوَرِثَ سُلَيْمَانُ دَاوُدَ “অর্থাৎ সোলায়মান হয়েছিলেন দাউদের উত্তরাধিকারী”- এর কি অর্থ হবে?
অপনোদন
এই আয়াতে যে উত্তরাধিকারিত্বের উল্লেখ রয়েছে তা দ্বারা সম্পত্তির উত্তরাধিকারিত্ব বুঝানো হয়নি বরং জ্ঞানের উত্তরাধিকারিত্ব বুঝানো হয়েছে। যদি সম্পত্তির উত্তরাধিকারিত্ব বুঝানো হতো তা হলে কেবল হযরত সোলায়মানই উত্তরাধিকারী হতেন না।
তা ছাড়া সম্পত্তির উত্তরাধিকারিত্ব উদ্দেশ্য হলে তা উল্লেখেরই কি প্রয়োজন ছিল? হযরত সোলায়মান নিঃসন্দেহে হযরত দাউদের পুত্র ছিলেন এবং পুত্র পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়া’লার বিশেষভাবে বর্ণনা করাই এই বিষয়ের উজ্জ্বল প্রমাণ যে, এই উত্তরাধিকারিত্ব ছিল জ্ঞানের, সম্পত্তির নয়। নচেৎ পার্থিব সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হওয়া কোন নবীর উৎকর্ষ ও বৈশিষ্ট্যের কারণ হতে কি?
আল্লাহ তায়া’লা ফরমান,
وَلَقَدْ أَتَيْنَا دَاؤُدَ وَسُلَيْمَنَ عِلْمًا
অর্থাৎ আমি অবশ্যই দাউদ ও সোলায়মানকে জ্ঞান দান করেছিলাম। (সূরা নমল-০৫)
যেই জ্ঞান, বিজ্ঞান ও নবুওয়াত যা আমি দাউদকে দান করেছিলাম তার উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র হযরত সোলায়মান আলাইহিস সালাম।
শিয়া মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাব “উসূলে কাফী”র একটি দ্ব্যর্থহীন রেওয়ায়ত পাঠকদের সম্মুখে পেশ করা হচ্ছে।
হযরত ইমাম জাফর সাদেক বলেন:
إِنَّ سُلَيْمَانَ وَرِثَ دَاوُدَ وَإِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِثَ سُلَيْمَانَ
অর্থাৎ সোলায়মান হয়েছিলেন দাউদের উত্তরাধিকারী এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম হয়েছেন সোলায়মানের উত্তরাধিকারী।(উসূলে কাফী)
প্রতীয়মান হল-দাউদের উত্তরাধিকারিত্ব সম্পত্তির ছিল না বরং জ্ঞানেরই ছিল যার উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন হযরত সোলায়মান এবং হযরত সোলায়মানের উত্তরাধিকারের উত্তরাধিকারী হয়েছেন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম। অথচ আমাদের হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম ও হযরত সোলায়মানের মধ্যে অনেক পুরুষ অতিবাহিত হয়েছে। কেউ প্রমাণ করতে পারবে কি- হযরত সোলায়মানের সেই পরিত্যক্ত সম্পত্তি কি ছিল যার উত্তরাধিকারী হয়েছেন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম।
আপত্তি নং-০৪
হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম দোয়া করেছিলেনঃ
فَهَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا يَرِثُنِي وَيَرِثُ مِنْ آلِ يَعْقُوبَ
সুতরাং তুমি তোমার নিকট হতে আমাকে দান কর উত্তরাধিকারী, যে আমার উত্তরাধিকারিত্ব করবে এবং উত্তরাধিকারিত্ব করবে ইয়াকুবের বংশের। (সূরা মারয়াম, আয়াত ৫-৬)
অপনোদন:
এই আয়াত থেকে তো আপত্তি নাকচ হয়ে যাচ্ছে এবং আপত্তিকারীর জ্ঞানের দৌড়েরও পুরাপুরি অনুমান হয়ে যাচ্ছে। হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম প্রার্থনা করছেন, হে আল্লাহ! আমাকে একটি সন্তান দান কর يَرثْنِي وَيَرِثُ مِنْ إِلِ يَعْقُوبَ আমার ও ইয়াকুবের বংশের উত্তরাধিকারী হবে। হযরত ইয়াহয়া হযরত যাকারিয়ার তো উত্তরাধিকারী হতে পারেন কিন্তু ইয়াকূবের বংশের উত্তরাধিকারী কিরূপে হবেন?
অথচ হযরত যাকারিয়া ও হযরত ইয়াকুবের মধ্যে রয়েছে দু’হাজার বছরের ব্যবধান। ইয়াকূবের বংশের সম্পত্তি কি তখনো পর্যন্ত অবিভক্ত পড়ে রয়েছিল যার উত্তরাধিকারী হতে হবে হযরত ইয়াহয়াকে?
বস্তুতঃ এই আয়াত থেকে এটাই বুঝানো হয়েছে যে, হে আল্লাহ! আমাকে একটি সন্তান দান করুন, যে আমার পরে আমার নবুওয়াতের পদ ও আমার জ্ঞান- বিজ্ঞানের উত্তরাধিকারী হবে এবং এটাই ছিল ইয়াকূবের বংশের উত্তরাধিকার।
ফাদাক প্রসংগ, নবীদের উত্তরাধিকার ও আপত্তিসমূহের অপনোদন সংক্ষিপ্তাকারে পাঠকদের সম্মুখে পেশ করা হল। ইনসাফের দৃষ্টিতে যারা দেখেন তাদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। বাকীদের জন্য বৃহৎ থেকে বৃহত্তর কিতাবও নিষ্ফল। আল্লাহ তায়া’লা আমাদেরকে ধর্ম বুঝার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের অন্তরকে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে পবিত্র করুন।
الحَمدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَانَا لِهَذَا وَمَا كُنَّا لَنَهْتَدِيَ لَوْلَا أَنْ هَدَانَا اللَّهُ وَصَلَّى اللَّهُ
عَلَى حَبِيبِهِ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَبَارَكَ وَسَلَّمَ
[প্রবন্ধ্টি আল্লামা শফী উকাড়ভী রাহিমাহুল্লাহ’র উর্দু ভাষায় লিখিত “সফীনা-ই নূহ” এর বাংলা অনুবাদকৃত কিতাব হতে সংকলিত]Discover more from RoushanDAlil.com
Subscribe to get the latest posts sent to your email.