মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের রহমত ও ক্ষমার দরজা সর্বদা তাঁর প্রত্যেক বান্দার জন্য উন্মুক্ত থাকে । ইরশাদ হচ্ছে- لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়োনা । [১] সৃষ্টিজগতে তাঁর করুণাধারা অবিরাম বর্ষণ হতে থাকে; আর তাঁর এই করুণা স্বীয় বান্দাকে সর্বদা ছায়া প্রদান করে যাওয়া তাঁরই মহান কৃপা । রহমান-রহীম মহীয়ান আল্লাহ তাঁর ঐ সকল দূর্বল ও গুনাহগার বান্দাদের ভুলত্রুটি ও পাপ মার্জনা এবং ক্ষমা ও নৈকট্য অর্জনের নিমিত্তে কিছু কিছু সময়কে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করতঃ ফযীলতপূর্ণ করেছেন । যাতে তাঁর রহমতের বারিধারা অবিরাম প্রবলবেগে বর্ষণ হতে থাকে, আর যাকে তিনি বিশেষভাবে মকবুল সময় হিসেবে নির্দিষ্ট করে রাখেন ।
এমন সব নির্দিষ্ট সময়, দিন, মাসের মধ্যে একটি মাস যাতে অবিরাম দয়া আর ক্ষমা বর্ষিত হয়, যাতে বান্দা তার রবের ইবাদতের মাধ্যমে আরও নৈকট্যলাভের সুযোগ পায় এমনি একটি মাস ‘শাবান’; যা আপন মহিমায় সুশোভিত । নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
وَشَعْبَانُ شَهْرِي فَمَنْ عَظَّمَ شَهْرَ شَعْبَانَ فَقَدْ عَظَّمَ أَمْرِي، وَمَنْ عَظَّمَ أَمْرِي كُنْتُ لَهُ فَرَطًا وَذُخْرًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
অর্থাৎ শা’বান হল আমার মাস, যে ব্যক্তি শা’বান মাসকে সম্মান করল সে যেন আমার আদেশকে সম্মান করল, আর যে আমার আদেশকে সম্মান করল তার জন্য কিয়ামত দিবসে মুক্তি ও আনন্দের ঘোষণা থাকবে । [২]
এমনিভাবে হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- رَجَبٌ شَهْرُ اللَّه، وَشَعْبَانُ شَهْرِي، وَرَمَضَانُ شَهْرُ أُمَّتِي
অর্থাৎ রজব আল্লাহর মাস, শা’বান আমার মাস আর রমযান আমার উম্মতের মাস । [৩]
ব্যস এভাবেই শা’বান মাসকে জাতে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সম্পৃক্ত করে একে মহিয়ান করা হয়েছে। এমনিভাবেই একে অন্য সব মাসের চেয়ে মাহাত্ম্য প্রদান করা হয়েছে । হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন –
فَضْلُ شَهْرِ شَعْبَانَ عَلَى الشُّهُورِ كَفَضْلِي عَلَى سَائِرِ الأَنْبِيَاءِ
অর্থাৎ শা’বান মাসের শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য মাসের উপর সেরূপ, যেরূপ আমার শ্রেষ্ঠত্ব সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণের উপর । [৪]
হুযুর সায়্যিদিনা গাউসুল আজম আব্দুল ক্বাদির জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু শা’বানের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন-
واختار من الشهور أربعة: رجب وشعبان ورمضان والمحرم، واختار منها شعبان، وجعله شهر النبي صلى الله عليه وسلم فكما أن النبي صلى الله عليه وسلم أفضل الأنبياء كذلك شهره أفضل الشهور
অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বছরের মাস সমূহের মধ্যে চারটিকে মাহাত্ম্য বা পূন্যবান করেছেন তা হল- রজব,শা’বান,রমযান ও মহররম । তন্মোধ্যে শা’বানকে নির্বাচিত করেন এবং একে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাস হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, যেমনিভাবে নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদা সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের উপর তেমনিভাবে শা’বানের মর্যাদা অন্য সকল মাসের উপর । [৫]
বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু শাবান শব্দের ব্যাখ্যায় বলেন –
شعبان (শ’বান) পাঁচটি হরফ (শিন,আইন,বা,আলিফ ও নুন) দ্বারা গঠিত। তার প্রত্যেক হরফই এক একটি ফযিলতের ইঙ্গিত বহন করে । যেমন ‘শীন’ দ্বারা (شراف) শারাফুন তথা সম্মান-মর্যাদা, ‘আইন’ দ্বারা (علو) উলুউন তথা উচ্চ মর্যাদা, ‘বা’ দ্বারা (بر) বিররুন তথা নেক আমল, ‘আলিফ’ দ্বারা (الفة) তথা হৃদ্যতা ভালোবাসা এবং ‘নুন; দ্বারা (نور) নুরুন তথা হেদায়াতের আলোর দিকে ইশারা করা হয়েছে । [৬]
তিনি আরও বলেন, শা’বান ঐ মাস, যে মাসে রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, আসমান হতে বরকত নাযিল করা হয়, গুনাহগার বান্দাদের ক্ষমা প্রদান করা হয়, অশান্তি ও খারাবি দূরীভূত করা হয়, এজন্যই একে গুনাহ হতে মুক্তি লাভের মাস বলা হয় ।
- শা’বান নামকরণের কারণঃ
বিখ্যাত অভিধানগ্রন্থ ‘লিসানুল আরবে’ বলা হয়েছে-
سُمِّيَ بِذَلِكَ لتَشَعُّبِهم فِيهِ… وَقَالَ ثَعْلَبٌ: قَالَ بَعْضُهُمْ إِنما سُمِّيَ شَعبانُ شَعبانَ لأَنه شَعَبَ، أَي ظَهَرَ بَيْنَ شَهْرَيْ رمضانَ ورَجَبٍ
অর্থাৎ শা’বানকে এ নামে অভিহিত করার কারণ হল, আরবরা এ মাসে কল্যাণের সন্ধানে বের হত… ছা’লাব বলেন- কারো কারো মতে শ’আবানকে শা’বান নামকরণ করা হয়েছে, কেননা এ মাস দু’টি বরকতময় মাস তথা রজব ও রমযান মাসের মধ্যবর্তী একটি মাস । [৭]
হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إنما سمي شعبان لأنه ينشعب لرمضان فيه خير كثير، وإنما سمي رمضان لأنه يرمض الذنوب
অর্থাৎ শা’বানকে শা’বান নামকরণ করা হয় কেননা, এ মাসে রমযানের আগমণ উপলক্ষে অসংখ্য নেকী ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং রমযানকে রমযান নামকরণ করা হয় কেননা এ মাসে অসংখ্য গুনাহ জ্বালিয়ে দেয়া হয় । [৮]
হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে আরও বর্ণিত, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- إِنَّمَا سُمِّيَ شَعْبَانُ لأَنَّهُ يَنْشَعِبُ فِيهِ خَيْرٌ كَثِيرُ لِلصَّائِمِ فِيهِ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ
অর্থাৎ শা’বানকে শা’বান নামকরণ করা হয় কেননা, এ মাসে রোযাদারদের জন্য পূন্য ও কল্যাণের প্রবাহ এমনভাবে বৃদ্ধি করা হয় যতক্ষণ না সে জান্নাতে প্রবেশ করছে । [৯]
- শা’বান মাসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলসমূহঃ
হযরত উসামা বিন যায়দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
شَعْبَانُ بَيْنَ رَجَبٍ وَشُهِرِ رَمَضَانَ، يَغْفُلُ النَّاسُ عَنْهُ، يَرْفَعُ فِيهِ أَعْمَالَ الْعِبَادِ، فَأُحِبُّ أَنْ لَا يُرْفَعَ عَمَلِي إِلَّا وَأَنَا صَائِمٌ
অর্থাৎ শা’বান মাস রজব ও রমযান মাসের মধ্যবর্তী একটি মাস, এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস যার সম্পর্কে অনেক মানুষ অবগত নয়। এটি ঐ মাস, যে মাসে বান্দার আমলনামা আল্লাহর দরবারে সরাসরি পেশ করা হয় । তাই আমি চাই আল্লাহর দরবারে আমার আমলনামা এমন অবস্থায় পেশ করা হোক যে সময় আমি রোযাদার । [১০]
উম্মুল মুমীনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত,
مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلَّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ
অর্থাৎ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে রমযান মাসের পর শাবান ব্যতীত অন্য কোন মাসে এত রোযা রাখতে দেখিনি। [১১]
অপর বর্ননায় এসেছে,
لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ شَهْرًا أَكْثَرَ مِنْ شَعْبَانَ، فَإِنَّهُ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّه
অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম শা’বান মাসের চেয়ে অধিক রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখিনি, এমনকি তিনি পুরো শাবান মাস রোযায় অতিবাহিত করতেন। [১২]
হযরত মা আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত,
كَانَ أَحَبَّ الشُّهُورِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَصُومَهُ: شَعْبَانُ، ثُمَّ يَصِلُهُ بِرَمَضَانَ
অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় মাসের একটি হল শা’বান । এ মাসে নফল রোযা আদায় করেই তিনি মাহে রমযানের রোযা পালন করতেন । [১৩]
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত –
سُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّ الصَّوْمِ أَفْضَلُ بَعْدَ رَمَضَانَ؟ فَقَالَ شَعْبَانُ لِتَعْظِيمِ رَمَضَانَ،
অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, রমযানের পর কোন মাসের রোযা অধিক উত্তম ? তিনি ইরশাদ করলেন, রমযানের সম্মান প্রদর্শনকল্পে শা’বান মাসের রোযা । [১৪]
একটু চিন্তা বিবেচনা ব্যয় করলে বুঝা যায় যে, যে মাসকে স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্মান প্রদান করেছেন, এর শান মান বর্ণনা করেছেন। সে মাসকে আমাদের কিভাবে অতিবাহিত করা উচিৎ! সে মাসে আমল কতটুকু হওয়া উচিৎ ! এ মাসের আমলকে কী সীমাবদ্ধ করা উচিৎ এই বলে যে- “এর ফযীলতের হাদীসের সনদে দূর্বলতা আছে;” অথচ সহীহ হাদীসসমূহ হতে এর ফজিলতগুলো জানা যায় । এ মাসে এমন এক রাত আছে যাতে দু’আ ফেরত নেয়া হয়না, আল্লাহ শেষ আসমানে অবতরণ করেন কেবল তাঁর বান্দাদের জন্য রহমতের বারিধারা বর্ষণের জন্য । কেবল মুর্খ,কূপমণ্ডক ব্যক্তির পক্ষেই এই মাস এবং এই মাসে অনাগত মহিমান্বিত শবে বরাতকে অস্বীকার করা সম্ভব । আল্লাহ আমাদের ঈমানকে হেফাজত করু এবং তাঁর রহমতের ছায়ায় অবিরাম নিবন্ধ রাখুন । আমিন, বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন ।
তথ্যসূত্রঃ
=====
১. সুরা আয যুমার আয়াতঃ৫৩ অনুবাদ- আ’লা হযরত কৃত কানযুল ঈমান, মাওলানা আব্দুল মান্নান ।
২. বায়হাক্বী, শো’বুল ঈমান ৫:৩৪৬ হাদীস নং-৩৫৩২ মাকতাবাতুর রুশদ রিয়াদ [প্রথম প্রকাশঃ২০০৩]
৩. ইমাম সাখাভী কৃত আল মাক্বাসিদ আল হাসানাহ, হাদীস নং- ৫১০ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত । [প্রথম প্রকাশঃ ১৯৮৫], কানযুল উম্মাল হাদীস নং-৩৫১৬৪ ।
৪. ইমাম সাখাভী কৃত আল মাক্বাসিদ আল হাসানাহ, হাদীস নং- ৭৪০ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত । [প্রথম প্রকাশঃ ১৯৮৫], দায়লামী আল ফিরদাউস বিমাছুরিল খিত্বাব, হাদীস- ৪৩৫১ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বৈরুত [প্রথম প্রকাশঃ ১৯৮৬] ।
৫. গাউসে পাক শায়খ আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহঃ কৃত গুনিয়াতুত ত্বালিবীন, ১:৩৪১ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বৈরুত [প্রথম প্রকাশঃ ১৯৯৭] ।
৬. প্রাগুপ্ত ।
৭. ইবনে মনযূর, লিসানুল আরব ১;৫০২ দারু সাদির বৈরুত ।
৮. গাউসে পাক শায়খ আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহঃ কৃত গুনিয়াতুত ত্বালিবীন, ১:৩৪০ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বৈরুত [প্রথম প্রকাশঃ ১৯৯৭] ।
৯. আত আতদ্বীন ফি আখবারে ক্বায্বীন ১:১৫৩ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বৈরুত ।
১০. বায়হাক্বী, শো’বুল ঈমান ৫:৩৫২ হাদীস নং-৩৫৪০, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ ২:৩৪৬ হাদীস-৯৭৬৫, সুনানে নাসাঈ হাদীস-২৩৫৭ ।
১১. সহীহ বুখারী, কিতাবুস সাওম,হাদীস নং-১৯৬৯/১৮৬৮, সহীহ মুসলিম,কিতাবুস সিয়াম,হাদীস নং-১১৫৭,সুনানে আবু দাউদ,কিতাবুস সাওম,হাদীস নং-২৪৩৪, সুনানু ইবনে মাজাহ হাদীস নং-১৭১০ ।
১২. সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৯৭0,সহীহ মুসলিম,কিতাবুস সিয়াম,হাদীস নং-১১৫৭, নাসাঈ আস সুনানুল কুবরা-২১৭৯, নাসাঈ আস সুনানুল কুবরা-২৫০০ ।
১৩. সুনানে আবু দাউদ,কিতাবুস সাওম,হাদীস নং-২৪৩১ , সুনানে নাসাঈ হাদিস-২৩৫০ ।
১৪. সুনানে তিরমিযি, হাদীস-৬৬৩ ত্বাহাভী শারহু মাআনিল আছার, হাদীস-৩৩৩০ ।
Discover more from RoushanDAlil.com
Subscribe to get the latest posts sent to your email.