জান্নাতের সর্দার ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র কারামত – দ্বিতীয় পর্ব

মুফতী আল্লামা সাইয়্যেদ যিয়াউদ্দীন নক্সবন্দী (দাঃ বাঃ)

  • কারামত – ০৩

গাল মুবারক আহতকারীর মৃত্যু

ইমাম তাবরানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মু’জামুল কবীর-এ বর্ণনা করেন,

‘বনী কাল্‌ব’ গোত্রের এক ব্যক্তি হতে বর্ণিত আছে যে, এক যালিম ব্যক্তি ইমামে আলী মাক্বাম হযরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে (কারবালা প্রান্তরে) তীর নিক্ষেপ করলো; যখনকিনা ইমাম পাক পানি পান করছিলেন। তীরটি দ্বারা ইমাম পাকের মাড়ি মুবারক ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেল। হযরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বদ-দোয়া করলেন, আল্লাহ তায়ালা যেন তোমার পিপাসা কখনো না মিটায়। তৎক্ষনাৎ সেই যালিম লোকটি পিপাসার্ত হয়ে গেল। তারপর থেকে সে অবিরাম পানি পান করতে লাগলো। একপর্যায়ে সেই যালিম ব্যক্তিটির দেহ ফেটে গেল, অতঃপর সে মারা গেল। [ইমাম তাবরানী কৃত আল মু’জামুল কবীর, হাদিস নম্বর ২৭৭২]

 

ঐ ব্যক্তির তীর দ্বারা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র গাল মুবারক আহত হয়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেল এমন অবস্থায়, যখনকিনা ইমাম পাক পানি পান করা শুরু করেছিলেন। ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু কে কষ্ট দেওয়ার পরিণাম স্বরুপ আল্লাহ তায়ালা ঐ যালিম ব্যক্তিকে এরূপ শাস্তি প্রদান করলেন। সে ব্যক্তিটি অবিরাম পানি পান করতে লাগলো, তারপরও তার পিপাসা যেন কোনভাবেই মিটছিলো না। সেই যালিম ইমাম পাকের গাল মুবারককে আহত করেছিল, আল্লাহ তায়ালা তার দেহকে বিদীর্ণ করার দ্বারা তাকে ধ্বংস করে দিলেন।

 

  • কারামত – ০৪

বমির কারণে পানি বের হয়ে গেলো

আল্লামা ইবনে আসীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৬৩০হিঃ) তারিখে কামিল-এ এরকমই একটি ঘটনার অবতারণা করেছেন।

আব্দুল্লাহ বিন আবিল হাছিন চিৎকার দিয়ে (ঠাট্টা করে) বলল, হে হুসাইন ! আপনি কি পানিকে দেখছেন না? পিপাসার্ত অবস্থায় আপনার শাহাদাত হয়ে যাবে, কিন্তু এক ফোঁটা পানির স্বাদও নিবেন না ! সাইয়্যেদুনা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকেও বদ-দোয়া করলেন- “হে আল্লাহ ! তাকে(হাছিনকে) পিপাসার্ত অবস্থায় নিধন করুন এবং কখনোই তাকে ক্ষমা করবেন না।” এরপরে ঐ ব্যক্তি এমন অসুস্থ হল যে, সামান্যতম পানি পান করার সাথে সাথেই সে তা বমি করে দিত। তারপর পুনরায় গিয়ে পানি পান করতো, কিন্তু পিপাসা মিটতো না। আবার বমি করতো, আবার পান করতো, কিন্তু এরপরও পিপাসা মিটতো না। মৃত্যু পর্যন্ত তার এরূপ অবস্থায়ই থাকলো। একপর্যায়ে সে ধ্বংস প্রাপ্ত হলো। (তারিখে কামিল, যিক্‌রে মাক্‌তালিল হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু, পৃষ্ঠা ১৬৭)

 

যালিম আব্দুল্লাহ বিন আবিল হাছিন ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র নিকট (ঠাট্টা করে) বলল যে, এক ফোঁটা পানির স্বাদও নিবেন না ? তার পরিণতি কতটুকু ভয়ানক হয়েছিল যে, সামান্যতম পানি পান করলেও সাথে সাথে সে তা বমি করে দিত। অর্থাৎ পানিও তার উপর বিন্দুমাত্র দয়া করল না যে, তার মধ্যে সে থাকবে।

[আল্লামা সাইয়্যেদ যিয়াউদ্দীন নক্সবন্দী এর ‘কারামাতে ইমাম হাসান ওয়া হুসাইন’ হতে লেখাটি অনূদিত ]

অনুবাদঃ মুহাম্মদ মহিউদ্দীন।

>> প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন এখানে


Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

ইয়াজিদ সম্পর্কে তার ছেলের জবানবন্দি

মুহাম্মদ গোলাম হুসাইন ইয়াজিদ সম্পর্কে সবচেয়ে বড় যেই সাক্ষ্যটি এসেছে, সেটি তার নিজ ঘর হতেই।  …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from RoushanDAlil.com

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading