অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি
عَنْ ابى سعيد الخدرى رضى الله عنه قال كان النبى صلى الله عليه وسلم يخرج يوم الفطر والاضحى الى المصلّى فاوّل شئ يَبدَاءُ به الصلاة ثم ينصرف فيقوم مقابلِ النَّاس جلوسٌ على صُفوفهم فيعظهم وَيُوصِيْهِم ويأمرهم- – – الحديث- (رواه البخارى)
অনুবাদ: হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহে গমন করতেন । সর্বপ্রথম তিনি সেখানে সালাত আদায় করতেন । এরপর মুসল্লিদের মুখোমুখি দাঁড়াতে । মুসল্লিরা তাদের কাতারে বসে থাকতেন, তিনি তাঁদের উদ্দেশে ওয়াজ-নসিহত করতেন এবং নির্দেশনা দিতেন . . . . আল হাদিস। [বুখারী শরীফ]
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
ঈদ শব্দের আভিধানিক অর্থ যা বারবার আগমন করে। মুসলিম উম্মাহর জীবনে দয়া, অনুগ্রহ, রহমত ও বরকত নিয়ে খুশী ও আনন্দের উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা শান্তির বারতা ও আনন্দের সওগাত নিয়ে বারবার আসে। পবিত্র ধর্ম ইসলামের এ আনন্দ ইবাদত কেন্দ্রিক, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনের প্রত্যয় ব্যতিরেকে ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন কোন প্রকার আনন্দ উৎসব ইসলাম অনুমোদন করে না। তাইতো দেখা যায় ইসলামী শরিয়তের সীমারেখায় অবস্থান করে নামায আদায়ের মাধ্যমে খুশী উদ্যাপন করার মহান শিক্ষা ও নির্দেশনা রয়েছে ইসলামী জীবন বিধানে।
দ্বিতীয় হিজরিতে ঈদের নামাযের বিধান, ঈদুল আযহার বিধান, কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার বিধান, সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার বিধান, নামাযের জন্য আযানের বিধান ও রমজানের রোযা ফরজ হওয়ার বিধান নাযিল করা হয়। এ বিধান নাযিল হওয়ার পর থেকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র পৃথিবী হতে বিদায়ের মূহূর্ত পর্যন্ত জীবনে ঈদের নামায বাদ দেননি। পবিত্র ক্বোরআনের সূরা আল্ কাউসার-এ এরশাদ হয়েছে-
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
অর্থাৎ আপনার প্রভুর উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানি করুন।
১০ জিলহজ্ব সূর্যোদয়ের পর হতে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত ঈদের নামায আদায়ের পূর্ণ সময়। প্রথমে ঈদুল আযহার নামায, পরে কুরবানি। নিু বর্ণিত হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عن البراء قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يخطب فقال اِنَّ اوّلَ مانبدأ من يَوْمِنَا هذا ان نُصلّىَ ثم نرجع فَنَنْحَرَ فمن فَعَلَ فقد اصاب سنّتنا
অর্থ: হযরত বারা ইবনু আযিব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্যে শুনেছি, তিনি এরশাদ করেন, আজকের দিনের কার্যক্রম আমরা প্রথমে নামায দ্বারা শুরু করব। অতঃপর আমরা ঘরে ফিরে গিয়ে আমাদের পশু যবেহ করব। যে ব্যক্তি এভাবে করল, সে আমাদের সুন্নাত অনুযায়ী সঠিক কাজ করল। [বুখারী শরীফ: ২ খ, পৃষ্ঠা ১৬]
- নামাযের পূর্বে কুরবানি দেয়া যাবে না
নামাযের পূর্বে কুরবানি করা শরিয়ত অনুমোদন করে না। ইসলামী ফিকহ্ শাস্ত্রগুলোতে এ বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা এসেছে। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عن انس بن مالك رضى الله عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم منْ ذبح قبل الصلوة فانمَا ذبح لنفسه ومن يذبح بعد الصلوة فَقَدْ تَمَّ نُسكَهُ وَاَصَابَ سُنَّةَ المُسلمِيْنَ- (رواه البخارى)
হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের আগে যবেহ করল, সেই নিজের জন্যই যবেহ করল। আর যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পর যবেহ করল তার কুরবানি পূর্ণ হলো এবং সে মুসলমানদের রীতি অনুসরণ করল। [বুখারী শরীফ: খ ৯, পৃষ্ঠা ১৯৬]
- কুরবানি আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল
পশুর রক্ত প্রবাহিত করা ও গোশত খাওয়ার নাম কুরবানি নয়। কুরবানি আর্থিক ইবাদত। মহান আল্লাহর প্রেম ভালোবাসা বুকে ধারণ করে অন্তরাত্মাকে বিশুদ্ধ চিত্তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মহান লক্ষ্যে তাকওয়া অর্জনের মধ্য দিয়ে নিজেকে আল্লাহর সমীপে উৎসর্গ করা, পশুবৃত্তি ও কুপ্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিজকে পরিশুদ্ধ করাই কুরবানির মর্মকথা। মহাগ্রন্থ আল্ ক্বোরআনের সূরা মায়িদা শরীফে এরশাদ হয়েছে-
انما يتقبّلُ الله من المتقينَ
অর্থাৎ ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীনদের কুরবানি কবুল করেন।’
হাদীস শরীফে কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত সংক্রান্ত অসংখ্য রেওয়ায়ত এসেছে, এরশাদ হয়েছে-
وعن عائشة رضى الله عنها انَّ النبى صلى الله عليه وسلم قال ما عمِلَ ابن ادمَ من عمل يوم النحر احبّ الى الله عزوجل من احراق الدم وانّه ليأتى يوم القيامة يقرونها واشعارها واظلافها وان الدّم ليقعُ من اليه بمكانِ قبلَ ان يقع بالارض فطيبوا بها نفسًا- (رواه ابن ماجة)
অর্থ: হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আদম সন্তান কুরবানির দিন যেসব নেক আমল করেন তন্মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো কুরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। কিয়ামতের দিবসে কুরবানির পশু তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত হবে, তার কুরবানির রক্ত জমীনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর নিকট তা কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা আন্তরিকভাবে খুশীমতে কুরবানি কর।
[ইবনে মাযাহ শরীফ]
- কুরবানি বর্জনকারীর প্রতি সতর্কবাণী
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে কুরবানি করা ওয়াজিব। মুসাফিরের জন্য কুরবানি ওয়াজিব নয় তবে করলে উত্তম। এতে অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে। নিজের পক্ষ থেকে কুরবানি করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানি করলনা সে গুনাহগার হবে। তার জন্য অশনি সংকেত রয়েছে। এরশাদ হয়েছে-
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من كان له سعة لم يضحّ فلا يقرُبنّ مصلانَا- (رواه ابن ماجه)
অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটে না আসে। [ইবনে মাযাহ শরীফ]
- তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব
পবিত্র জিলহজ্বের ৯ তারিখের ফজর নামায হতে ১৩ তারিখের আসর নামায পর্যন্ত সময়কে ‘আইয়্যামে তাশরীক’ বলে, এ দিনগুলো নারী-পুরুষ সকলের জন্য ফরজ নামাযের পর তাকবীর তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عن الاسود رضى الله عنه كان عبد الله يكبّر من صلاة الفجر يوم عرفة الى صلاة العصر من النحر يقول الله اكبر الله اكبر لا اله الا الله والله اكبر الله اكبرولله الحمد- (رواه ابن ابى شيبه)
অর্থ: তাবিয়ী হযরত আসওয়াদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, হযরত আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু আরাফার দিন (৯ জিলহজ্ব) ফজরের নামায থেকে কুরবানির দিনসমূহের আসরের নামায পর্যন্ত তাকবীর বলতেন। তিনি বলতেন (অর্থ) আল্লাহ্ সর্ব শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ্ সর্ব শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই। এবং আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ, আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ, এবং আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। [ইবনে আবী শাইবা সহীহ সনদে]
- কুরবানির সময়সীমা ৩ দিন
জিলহজ্ব মাসের ১০ম তারিখ কুরবানি করা উত্তম। কোন কারণ বশতঃ প্রথম দিবসে করা সম্ভব না হলে দ্বিতীয় দিন এতেও সম্ভব না হলে ১২ তারিখ পর্যন্ত করা জায়েয।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে-
قال عليه الصلاة والسلام ايّام النحر ثلاثة افضلها اوّلها
অর্থ: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, কুরবানির সময় তিন দিন, প্রথম দিনই উত্তম।
তাশরীক শব্দের অর্থ হলো, গোশত কাটা ও রৌদ্রে শুকানো, আরব বাসীরা কুরবানির দিবসে গোশত ১১, ১২. ১৩ তারিখ রৌদ্রে শুকাতো। আরবি অভিধান আল্ মুনজিদে বলা হয়েছে-
ايام التشريق فى ثلاثة ايام لانّ لحوم الاضَاحِىّ تشرّق فيها
অর্থাৎ আইয়্যামে তাশরীক ঈদুল আযহার তিন দিনকে বলা হয়। কেননা সে দিনগুলোতে কুরবানির গোশত রৌদ্রে শুকানো হতো।
- কুরবানির গোশত তিন দিনের অধিক না রাখা
ইসলাম ত্যাগের ধর্ম, ভোগের নয়। ত্যাগেই প্রকৃত আনন্দ ইসলাম অন্যকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে নিজে আনন্দ ভোগ করাকে সমর্থন করে না। অপরের স্বার্থ সুরক্ষা ও অন্যজনের কল্যাণ সাধনে ইসলাম প্রতি ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেছে। এ কারণে সমাজে নিঃস্ব, অসহায়-গরীব-ফকির-মিসকিনরাও যেন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেই জন্য ঈদুল ফিতরে সাদকাতুল ফিতর প্রদান ওয়াজিব করা হয়েছে। তেমনিভাবে কুরবানির যবেহকৃত পশুর সব গোশত নিজেদের জন্য রাখা নিষেধ না হলেও গোশতকে তিন ভাগ করে একভাগ নিজের জন্য একভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য আর একভাগ ফকির মিসকিনদের জন্য বন্টন করা উত্তম বলা হয়েছে। হাদীস শরীফে হকদারকে বঞ্চিত করে কেবল নিজের ভোগের জন্য তিন দিনের অধিক সময় না রাখতে উৎসাহিত করা হয়েছে এরশাদ হয়েছে-
عن عائشة رضى الله عنها قالت الضحية كُنّا نملح فقدّم به الى النبى صلى الله عليه وسلم بالمدينة فقال لاتاكلوا اِلّا ثلاثة ايام وليست بعزيمة ولكن اراد ان يطعم منه والله اعلم- (رواه البخارى)
অর্থ: হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদীনায় অবস্থানের সময় আমরা গোশতের মধ্যে লবণ মিশ্রিত করে রেখে দিতাম। অতঃপর তা নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে পেশ করতাম, তিনি বলতেন, তোমরা তিন দিনের পর খাবে না।
তবে এটি জরুরি নয়। বরং তিনি ইচ্ছে করেছেন তা থেকে যেন অন্যদের খাওয়ানো হয়। আল্লাহ্ অধিক অবগত। [বুখারী শরীফ কুরবানি অধ্যায়: পৃষ্ঠা ২০৭]
বণির্ত হাদীস শরীফে যারা কেবল নিজের পরিবারের ভোগের জন্য কুরবানির গোশত অন্যদেরকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করে সারা বৎসর ফ্রিজ-এ সংরক্ষণ করে রাখে তাদের জন্য ত্যাগের শিক্ষা রয়েছে।
- আকিকার বিধান
আকিকা (عقيقة) শব্দটি عِقٌّ থেকে নির্গত এর অর্থ কাটা পৃথক করা। عقيقة المولود অর্থাৎ নবজাত শিশুর চুল যা তার ভূমিষ্ট হওয়ার পর কেটে ফেলা হয়। ইসলামী শরিয়তে সন্তান সন্ততি ভূমিষ্ট হওয়ার পর মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া স্বরূপ যে পশু যবেহ করা হয় তাকে আকিকা বলা হয়।
ইমাম আযম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র মতে আকিকা করা সুন্নাত। ইমাম আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর এক বর্ণনা মতে আকিকা ওয়াজিব। অধিক সংখ্যক বর্ণনাকারীর মতে সুন্নাত হিসেবে প্রমাণিত।
- আকিকার সময়
সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চতুর্দশতম দিবসে তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে, তাও সম্ভব না হলে যে দিন সম্ভব সেদিন আকিকা করবে।
আকিকার সংখ্যা
ছেলে সন্তান হলে দু’টি ছাগল, অথবা গরু-মহিষের দুই অংশ আকিকা করবে, মেয়ে হলে একটি ছাগল অথবা গরু-মহিষের এক অংশ আকিকা করবে। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عن عائسشة رضى الله عنها قالت اَنَّ رسول الله صلى الله صلى الله عليه وسلم امرهم عن الغلام شاتان وعن الجارية شاة- (رواه الترمذى)
অর্থঃ হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ছেলে সন্তানের জন্য দু’টি সমবয়সী ছাগল আর মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল আকিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে আকিকা প্রসঙ্গে আরো এরশাদ হয়েছে-
عن على بن ابى طالب قال عقّ رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الحسن بشاة وقال يا فاطمة اخلقى رأسه
অর্থঃ হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু-এর পক্ষ থেকে একটি ছাগল দ্বারা আকিকা করেছেন এবং বলেছেন হে ফাতিমা হাসান এর মাথা মুড়িয়ে দাও।
- আকিকার পশুর বয়স
ছাগল, ভেড়া এক বছর বয়সী, গরু-মহিষ দুই বছর বয়সী, উট পূর্ণ পাঁচ বছর বয়সী হওয়া উত্তম।
- আকিকার গোশত
কুরবানির গোশতের ন্যায় আকিকার গোশতও তিনভাগ করে এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বন্টন করে দেয়া সুন্নাত। অবশ্য পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশী হলে সব অংশ ঘরে রেখে দেয়াও জায়েয। আত্মীয়-স্বজন স্বচ্ছল হলেও তাদেরকে আকিকার গোশত দেয়া যাবে।
- আকিকার উপকারিতা
হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عن سمرة بن جندب رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الغلام مرتهن بعقيقته يذبّح عنه يوم السابع- (رواه الترمذى)
অর্থ: যহরত সামুরা ইবন জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, নবজাতক নিজ আকিকার সাথে বন্ধক থাকে, তার জন্মের সপ্তম দিবসে তার পক্ষ থেকে একটি আকিকার পশু যবেহ করবে। [তিরমিজী শরীফ]
শিশু সন্তানকে বিভিন্ন প্রকার রোগ ব্যাধি, বালা-মুসিবত ইত্যাদি থেকে নিরাপদ রাখা ও সুরক্ষায় আকিকা একটি পরীক্ষিত উত্তম আমল। মহান আল্লাহ্ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আ-মী-ন।
Discover more from RoushanDAlil.com
Subscribe to get the latest posts sent to your email.